শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৯:৫৩ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
জগন্নাথপুরে আদালতের নির্দেশ মোতাবেক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ও নির্ধারিত তারিখে দোকানঘর  নিলাম হয়নি!   সাংবাদিক শংকর রায়ের মৃত্যু তে প্রবাসী  সাংবাদিক তৌফিক আলী মিনার এর শোক জগন্নাথপুর প্রেসক্লাব সভাপতি শংকর রায় আর নেই: প্রেসক্লাবের শোক এবার ৩২ টাকা কেজিতে ৫ লাখ টন ধান,   ১২ লাখ টন চাউল কিনবে সরকার  জগন্নাথপুরে লন্ডন প্রবাসীর বাড়ী বেদখল চেষ্টায় সংবাদ সম্মেলন জগন্নাথপুরে হাওরে ধান কাটার ধুম, বঙ্গবন্ধু-১০০ জাতের ধানে চিটা শান্তিগঞ্জে বর্ণাঢ্য আয়োজনে পহেলা বৈশাখ উদযাপন শান্তিগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঈদ পুনর্মিলনী ও আলোচনা সভা  উন্নত জাতি বিনির্মাণে সাংবাদিকরা অগ্রণী ভূমকিা পালন করেন: এমএ মান্নান এমপি জগন্নাথপুরে সার-বীজ বিতরন কালে সাবেক মন্ত্রী, দেশে এখন পরিবর্তনের হাওয়া বইছে

একটি আয়াতের সর্বজনীনতা

একটি আয়াতের সর্বজনীনতা

ইসলামিক ডেস্ক :: কোরআন মুসলিমদের কাছে পবিত্র এবং ঐশীগ্রন্থ। তবে কোরআন মজিদের একটি আয়াতের অবেদন সর্বময় ও সর্বজনীন। বুদ্ধি-যুক্তি ও ব্যবহারিক বিজ্ঞানের আলোকে এটি প্রমাণ
করা যায়
মানবকুলকে মোহগ্রস্ত করেছে নারী, সন্তান-সন্ততি, রাশিকৃত স্বর্ণ-রৌপ্য, চিহ্নিত অশ্ব, গবাদিপশুরাজি এবং ক্ষেত-খামারের মতো আকর্ষণীয় বস্তুসামগ্রী। এ সবই হচ্ছে পার্থিব জীবনের ভোগ্যবস্তু। আল্লাহর কাছেই হলো উত্তম আশ্রয়। (সূরা আলে ইমরান : ১৪)।
কোরআন মুসলিমদের কাছে পবিত্র এবং ঐশীগ্রন্থ। তবে কোরআন মজিদের একটি আয়াতের অবেদন সর্বময় ও সর্বজনীন। বুদ্ধি-যুক্তি ও ব্যবহারিক বিজ্ঞানের আলোকে এটি প্রমাণ করা যায়। সৃষ্টিকুলের সবার মধ্যে মানুষকে গণ্য করা হয় সর্বোৎকৃষ্ট বুদ্ধিমান প্রাণী। মানুষের বুদ্ধির বৈচিত্র্য, ব্যাপকতা কিংবা বহুমুখিতা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই কোনো দেশে বা কোনো কালে। বুদ্ধির উৎকৃষ্টতাই অপরাপর প্রাণী থেকে মানবজাতিকে স্বাতন্ত্র্যপূর্ণ এবং বিশেষ বৈশিষ্ট্যময় করে রেখেছে। বুদ্ধির ঈঙ্গিতপূর্ণ ধনাত্মক ভিন্নতাই মানবজাতিকে অনুভূতি, ন্যায়-অন্যায়, বর্ণ-গন্ধ ইত্যাদির মধ্যে পার্থক্য করার রসদ জোগায়। পরিবেশ-প্রতিবেশের প্রতিকূলতাকে জয়করত টিকে থাকার অদম্য বুদ্ধিমান প্রচেষ্টাই মানবজাতিকে অপরাপর বহু প্রাণীর মতো চিরতরে হারিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে চলেছে যুগে যুগে। ধর্ম-জাতির পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও শুধু একজন মানুষ হিসেবে বিবেচনা করলেও দেখা যাবে, দেশ-ধর্ম নির্বিশেষে সে মোহগ্রস্ত হয় নারীতে কিংবা পুরুষে, সন্তানাদিতে, সম্পদ বা সম্পত্তিতে। সেটি স্বর্ণ-রৌপ্য, ব্যবসা-বাণিজ্য, জমি-জাতি, ঐশ্বর্য-যশ, খ্যাতি যেরূপেই হোক না কেন। প্রণিধানযোগ্য যে, আয়াতটিতে খুব স্পষ্টভাবে উল্লেখিত আছে, ‘মানবকূলকে মোহগ্রস্ত করেছে নারী।’ অর্থাৎ নারীরাই মানবকূল তথা তাবৎ পুরুষকে মোহগ্রস্ত করেছে। চিন্তা এবং উদ্বেগের বিষয় এই যে, নারীই কি তবে সব অনর্থের জন্য দায়ী?
মুসলিমদের দাবি মতে,  কোরআনের মতো নির্ভেজাল-নির্ভুল একটি ঐশীগ্রন্থ (যার দ্বিতীয়টির নজির নেই, হবেও না কোনোদিন) কোনো একটি কার্য-কারণের জন্য শুধু নারীদেরই কেন কাঠগড়ায় দাঁড় করল। উত্তর খুব সহজ, বিজ্ঞানময় এবং যৌক্তিক। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, পুরুষ ও নারীর শারীরিক গঠনের রাসায়নিক ভিন্নতা নিয়ে। একজনের শরীর ক্ষারীয়(Alkaline), অন্যজনের অম্লীয় (Acidic)। বিজ্ঞানই স্পষ্ট করেছে, ক্ষার এবং  অম্লের বৈশিষ্ট্য ও আকর্ষণের তীব্রতা সম্পর্কে। পুরুষ ও নারীর গাত্র গন্ধের ভিন্নতা, প্রস্রাবের গন্ধের ভিন্নতা, স্বাদ-রুচির ভিন্নতা, মস্তিষ্কের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার ভিন্নতা, এসবই নারী-পুরুষের শরীরের রাসায়নিক ভিন্নতার কারণে ঘটে থাকে। উগ্র নারীবাদীরা বলতে উদগ্রীব যে, কেন নারীরা পুরুষের মতো দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করতে পারবে না, কেন বৃক্ষরাজিতে দেদারসে উঠতে পারবে না, কেন অবলীলায় দৌড়ঝাঁপ করতে পারবে না। এসব বহু বিতর্কিত বহমান প্রশ্নের যৌক্তিক বিজ্ঞানসম্মত উত্তর হচ্ছে, পুরুষ-নারীর শরীরের গঠনগত (Structural) ভিন্নতা। পুরুষ চাইলেই দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করতে পারে। কারণ, তার প্রস্রাব নালির দীর্ঘতা এবং বাঁক তাকে সংশ্লিষ্ট মাংসপেশির বলপ্রয়োগের মাধ্যমে নিজ শরীর থেকে  দূরে প্রস্রাব নির্গমনে সহায়তা করে। নারী পারে না। এর  কারণ তার শারীরিক গঠনগত ভিন্নতা।
বিজ্ঞানের কথা বলা হলো বুদ্ধি এবং যুক্তিতে  কিংবা ব্যবহারিক জ্ঞানে। সব প্রাণিকুলের মধ্যেই নারী শ্রেণির অবয়ব, গঠন, উপস্থাপন কিন্তু কোমল, নমনীয়, সৌকর্য এবং সৌন্দর্যের নিরীখেই হয়ে থাকে। এ সত্যটি কোনো বিশেষ যুগ-জাতি কিংবা স্থানের নয়। এটি সর্বসময়ের সর্বজনীন বাস্তবতা। মোটা দাগে বললে, প্রাণীকুলের পুরুষ জাতির মধ্যে রুক্ষতার তীব্রতা প্রকট এবং প্রকাশমান। কিন্তু নারীকুলের মধ্যে কোমলতা-লজ্জাশীলতা ব্যাপক। সৃষ্টিগতভাবেই পুরুষ আগ্রাসী। কোমলতা, স্নিগ্ধতা, নমনীয়তা এবং আকর্ষক হওয়ার স্বভাবগত বৈশিষ্ট্যই নারী জাতিকে আকর্ষণের মূলে রাখার অমোঘ রহস্য।
তাই যুগে যুগে নারীতেই মোহাবিষ্ট হয় পুরুষ। হয় পদস্খলিত-ভ্রষ্ট-দিগভ্রান্ত। সন্তান, সম্পদ-খ্যাতি, ক্ষমতার একরৈখিক এবং সীমাবদ্ধ চেতনাই মানুষকে ঠেলে দেয় হানাহানির পথে। অনৈতিকতা কিংবা অন্যায়ের পথে। আপনি ক্ষমতাপ্রাপ্ত হবেন মানে যশপ্রাপ্ত হবেন। আপনি ক্ষমতাপ্রাপ্ত হবেন মানে খ্যাতি পাবেন। আপনি ক্ষমতাপ্রাপ্ত হবেন মানে সব কাজে তুলনামূলকভাবে স্বাচ্ছন্দ্য আর স্বাধীনতা কিংবা স্বকীয়তাপ্রাপ্ত হয়ে তৃপ্তিলাভ করবেন। অথচ এটি করতে গিয়ে বৈধতা-ন্যায্যতা-নিয়মনীতির তোয়াক্কা করবেন না, প্রকারান্তরে অপরাপর মানুষ আপনার দ্বারা নির্যাতিত-নিপীড়িত হবে। অধিকার বঞ্চিত, অসম্মানিত হবে, এটি হতে পারে না। ফিরে যাই সেই আয়াতটিতে। মানবকুল সত্যিই পথভ্রষ্ট হয় নারীতে বা পুরুষে, সম্পদ বা ক্ষমতা প্রাপ্তিতে, যশ বা খ্যাতিতে। সন্তান-সন্ততিতে বা তাদের সাফল্যের ঈর্ষায়। যদি কেউ কোনোভাবে, কোনো ধর্মে সত্যিই বিশ্বাস স্থাপন করে থাকে, তবে এ সত্য তাকে মানতেই হবে যে, কিসের দ্বারা আপনি মোহাবিষ্ট হন, পথভ্রান্ত হন, অত্যাচার-নিপীড়ন করেন। অন্যায্য কিংবা দুর্নীতি করেন।
অথচ আপনার বিশ্বাস মতে আপনার প্রভুর কাছেই আপনার শেষ কিন্তু উত্তম আশ্রয়। বিচারের ভার, কার্যের দায় ইত্যাদিও। শুরুতে এটিই বলতে চেয়েছিলাম, আয়াতটি কোরআনের হলেও শুধু মুসলিমদের জন্য নয়। এটি সর্বজনীন, সর্বসময়ের, সব ধর্মের লোকের জন্যই প্রযোজ্য।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2017-2023 Jagannathpurnews.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com